ফিরে দেখা ২০২২ – প্রীতম

ফিরে দেখা ২০২২ - প্রীতম Meghpori

ফিরে দেখা ২০২২প্রীতম ধারা

ছোট ছোট কিছু টুকরা গল্পে বাঁধা, এলোমেলো কিছু স্মৃতিতে সাজানো বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো। আর এসব স্মৃতির পুরোটাই জুড়ে থাকে প্রিয় বন্ধুরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে আবেগের জায়গা দখল করে রাখে এই প্রিয় বন্ধুরাই। নিজ নিজ বাড়ি থেকে অনেক দূরে বন্ধুরাই একমাত্র ভরসার জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সার্কেল অন্য সব সার্কেল থেকে একটু ভিন্ন। এখানে একেকজন দেশের একেক প্রান্ত থেকে উঠে আসে। তাই সার্কেলের মধ্যেও দেখা যায় বৈচিত্র্য। তবে এত বৈচিত্র্য থাকার পরও বন্ধুদের মধ্যে আবেগ ও ভালোবাসার কমতি থাকে না।
যদিও এই যান্ত্রিক শহরে দেয়াল আর গলি গুলো স্পেশাল কিছুনা। তবুও এই গলি দিয়ে হাটলে শান্তির স্পর্শ পাওয়া যায়।এই সিড়ি ফ্লোর সবকিছুতেই নিজস্ব একটা চাপ আছে,একটা নিজস্ব গন্ধ আছে।বসতে গেলে কখনো ধুলো ময়লা বাধা হয়নি।

আড্ডা, শরগোল, হাসি, ঝগড়া. জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ের এক মূল্যবান স্মৃতি গুলা এই ছোটো গলি আর দেওয়াল গুলো তে লেপে আছে…!

বন্ধুত্বের স্মৃতিগুলো এই স্বল্প জায়গাতেই ঘুরে বেড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয় বলতে এই স্বল্প জায়গাতেই বিশালতার স্বাদ দিয়েছে।আর কখনোই এই গলি গুলোতে অনুভূতিগুলো খুজে পাওয়া যাবেনা। ছোট্ট লিফ্টটাতে দলের সবার জায়গা নেওয়ার হাজারো ব্যার্থ চেষ্টা। এ যেনো এক অতৃপ্ত স্মৃতি, যার মোহে বার বার ফিরে যেতে যায় মন।

এপ্রিল ৩০ তারিখ ধানমণ্ডি থেকে ড্যাফোডিল নাম নিশানা বলে আর কিছু নেই।সেই ২০০২ থেকে ২০২২ এই বিশ বছরে চলার পথে কত ছাত্র ছাত্রীর কত স্মৃতি জরিয়ে রয়েছে এই ক্যাম্পাস তা আর বলতে কি! যদি নিজের কথাই বলি এই DT-5 এর পাঁচ তলা কিংবা গলি আমি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো কাটিয়েছি।আশুলিয়া ক্যাম্পাসের মতো এতো বড় মাঠ এতো বড় ক্লাসরুম নেই কিন্তু ছয় তলার কাউন্সিলিং রুমের সামনের যেই জায়গাটা এই জায়গাটা বড় মাঠের আফসোস সবার গুছায় দিতো।ইমারজেন্সি নেটের জন্য ৬০৪ নম্বর রুমের সামনে ভীড় করা।ক্লাস থেকে বের হলেই কারো না কারো সাথে দেখা হতো।সিনিয়র কিংবা জুনিয়র কিংবা ক্লাসমেট কারো না কারো সাথে দেখা হবেই।কখনো আবার নিজের পছন্দের শিক্ষকদের পেয়ে এইটা সেইটা নিয়ে গল্প করা।মাঝে মাঝে ওনারাও আমাদের আড্ডায় যোগ দিয়ে কিছুক্ষণ মজা করে চলে যেতেন। আর তখন এই ছোট্ট জায়গায়টা পরিনত হতো সবার এক আনন্দের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে।আড্ডা দিতে দিতে নিচে নেমে সেই দিকেও আড্ডা।সবাই মিলে এক হতো এই গলিতে।ক্লাস শেষের ক্লান্তি কাটানোর জন্য সবাই গলিতে নেমেই এই মামা চা,এই মামা সিগারেট তারপর একের পর এক মানুষের সাথে দেখা। এই গলি থেকে পাঁচ তালা, আবার পাঁচ তালা থেকে এই গলি, সকাল থেকে সন্ধ্যা এইভাবেই কাটানো হতো সময়। সব কিছুই এখন সবার জন্য স্মৃতি হয়ে আছে, থাকবে। কিন্তু হয়তো এই স্মৃতিগুলো মনের পরার জন্য সেই জায়গাটায় গিয়ে মনে করা যাবে না।কারন থাকবে না এর কোনো অস্তিত্ব।

পরিবর্তন হচ্ছে পরিবর্ধন এর জন্য, বিকাশের জন্যে। সবুজের ছোয়ায় যান্ত্রিকতা হারিয়ে যাবে,কিন্তু সবুজের মতন এই এটুকু যান্ত্রিকতা হৃদয়ে থেকে যাবে সারাজীবন। দেখা হবে সবুজ ক্যাম্পাস এ নতুন বিকাশের পূর্ণতা খোঁজতে।

Please rate this Post

5/5 (1)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *